হাত-পা বেঁধে, লাঠি দিয়ে মারধর করে সমস্ত সম্পদ লিখে নিয়েছে শওকত!

সাতক্ষীরায় তালা উপজেলার আটারই গ্রামে এক বয়ষ্ক মহিলাকে রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে নির্যাতন অতঃপর বৃদ্ধার সমস্ত জমি দলিল করে নিয়েছে বৃদ্ধার দূর সর্ম্পক্যের এক আত্নীয় শওকত আলী শেখ।

বৃদ্ধা মহিলার করুণ আকুতির ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।ভুক্তভোগী বৃদ্ধা হলেন গোলজান বিবি, সে তালা উপজেলার আটারই গ্রামের বাসিন্দা। অন্যদিকে, অভিযুক্ত শওকত আলী,সে আটারই গ্রামের শেখ পাড়ার মোহাম্মাদ শেখের ছেলে।ভুক্তভোগী বৃদ্ধার প্রতিবেশি খোকন মোড়ল জানায়, ‘বৃদ্ধা গোলজান বিবির পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই।

একটা বোন ছিল সেও চার বছর আগে মারা গেছেন। বর্তমানে বৃদ্ধা একা আছেন পৃথিবীতে। ছোট্ট একটি মাটির ঘরে বৃদ্ধা একা একা থাকেন। দিনে তিন বেলা কখনো খাবার জোটেনা তার। বৃদ্ধার বেশ কিছু জমি রয়েছে। ধর্মভীরু এই মানুষটি তার জমির মধ্যে থেকে একটি জমি স্থানীয় আটারই মোড়ল ও শেখ পাড়া জামে মসজিদের কল্যাণে দান করেছেন।’‘মসজিদ কর্তৃপক্ষ সে জমিটি মসজিদের উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। বৃদ্ধা কিছুদিন আগে হটাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।

বয়সের ভার আর অসুস্থার কারনে কথা বলতে পারেন না এখন। এই অসুস্থার সুযোগে বৃদ্ধার দূর সর্ম্পক্যের আত্নীয় অভিযুক্ত শওকত আলী শেখ বৃদ্ধাকে তার বাড়িতে সুস্থতার জন্য নিয়ে যান। বৃদ্ধাকে শওকত আলীর বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন।’‘অতিমাত্রায় ঘুমের ঔষধ খাওয়ানোর ফলে বৃদ্ধা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

সে সুযোগে শওকত আলী বৃদ্ধার সমস্ত জমি নিজ নামে দলিল করে নেন। বৃদ্ধা মসজিদে যে জমিটি দান করেছিলেন সেটাও শওকত নিজ নামে দলিল করে নেন। বৃদ্ধা গোলজান বিবির কাছ থেকে সমস্ত জমি দলিল করে নিয়ে শওকত তাকে অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে।’বৃদ্ধার হাত, পা রশি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করে। রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় উচুঁ করে ঘরের মধ্যে ফেলে দেন। ফলে বৃদ্ধার হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে। মেরুদন্ডসহ দেহের অন্যান্য অঙ্গে মারাত্মক ভাবে আঘাত পেয়েছেন।

শওকত আলীর এ সব কিছুর করার পেছনে উদ্দেশ্য ছিল বৃদ্ধাকে মেরে ফেলা। এছাড়া বৃদ্ধা গোলজান বিবি সরকার থেকে বয়স্ক ভাতা পান। বয়স্ক ভাতার টাকাগুলো বৃদ্ধা গচ্ছিত রেখে দেন। সে সকল টাকাও শওকত নিয়ে নিয়েছেন।তিনি আরও জানান, জমি দলিল করে নেওয়ার পরে সে সকল জমিতে দখলের জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন । মসজিদে দানকৃত জমিতেও তিনি জবরদখল করার পায়তারা চালাচ্ছে।স্থানীয় সুশিল সমাজের লোকজন বিষয়টি নিয়ে খুবই মনঃক্ষুণ্ণ। শওকত আলীর এই জঘন্যতম কাজকে এলাকাবাসী ধিক্কার জানিয়েছেন।ইতিমধ্যে বৃদ্ধা গোলজানকে এলাকাবাসী শওকতের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছেন ।

বর্তমানে বৃদ্ধা তার প্রতিবেশি খোকন মোড়লের বাড়িতে আশ্রয়নরত আছেন। বৃদ্ধা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন একটি করুণ আকুতি নিয়ে। তিনি তার জমি ফেরত পেতে চান। মসজিদের কল্যাণের জমিটি মসজিদ কল্যাণে ব্যবহার হবে এটাই বৃদ্ধার দাবি।তবে মারধরের বিষয়টি অভিযুক্ত শওকত আলী অস্বীকার করে বলেন, কতজন কত কি বলে। আর জমি না দিলে কেউ জোর করে নিতে পারে?

এর আগে, বৃদ্ধা গোলজানের বেশ কিছু ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বৃদ্ধা মহিলার করুণ আকুতি আর হৃদয়বিদায়ক দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়। বিষয়টি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন মহোদয়ের নজরে আসলে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেন।এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেন, বৃদ্ধা মহিলার বিষয়টি দেখছি। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।। ইতিমধ্যে খবর নিয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।